অপরিকল্পিতভাবে ফেলা জিও ব্যাগ পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ব্যাগ ছিড়ে বালু বেরিয়ে এসেছে। অনেক জিও ব্যাগের উপর শ্যাওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও জিও ব্যাগ সরে গিয়ে ছোটো-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় পর্যটকরা জোয়ারের সময় সমুদ্রে গোসলে নেমে প্রায়শই দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন। ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটায় আসা অন্তত অর্ধশতাধিক পর্যটক গোসলে নেমে আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
শুধুমাত্র জিও ব্যাগ ফেলে সাগরের অব্যাহত ভাঙন রোধের এই চেষ্টাকে অর্থের অপচয় বলে দাবি করেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। তাদের দাবি, স্থায়ীভাবে কাজ না করে এভাবে জিও ব্যাগ ফেলে বরং সৈকতের সৌন্দর্যকেও নষ্ট করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দুর্ঘটনা ও ভোগান্তি বাড়ছে। এভাবে সৌন্দর্য বিলীন হলে যেকোনো সময় ভ্রমণপিপাসুরা কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে আশঙ্কা তাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সাগরের প্রবল জোয়ার আর ঢেউয়ে বালু ক্ষয়ের কারণে প্রতিবছরই ভাঙছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। একই সাথে বিলীন হচ্ছে এলাকার বিভিন্ন স্থাপনা। নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সৈকত রক্ষার নামে পাউবো কয়েক দফায় কোটি কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবে তেমন কাজে আসেনি। উল্টো খানাখন্দের কারণে পর্যটকরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
পর্যটক জহিরুল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভালো লাগলেও সৈকতের অবস্থা খুবই খারাপ। যত্রযত্র বালু ভর্তি জিওব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাও আবার শ্যাওলা পাড়া পিচ্ছিল অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুরনো স্থাপনার অংশবিশেষ জেগে উঠেছে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা হওয়ার আশংকা করেছেন তিনি।
অপর এক পর্যটক সিফাত বলেন, এসব জিও ব্যাগ থেকে বালু বেরিয়ে এসে ছোটো-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়া ছাড়াও বিশেষ করে জোয়ারের সময় গোসলে নেমে অনেকে আহত হচ্ছেন।
বীচ ট্যুরিজমের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, বর্তমানে যে স্থাপনার অংশবিশেষ বেরিয়ে এসেছে সেগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। এর আগেও বেশ কিছু ভবনের অংশবিশেষ বেরিয়ে এসেছিল। সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. রবিউল ইসলাম বলেন, পুরনো স্থাপনার অংশবিশেষ এবং জিও ব্যাগ অপসারণে দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।