গাইবান্ধায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক মতবিনিময় সভায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার উপস্থিতি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ মে) জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় এনসিপির সাংগঠনিক কার্যক্রম, উপজেলা কমিটি গঠন ও দলীয় নিবন্ধন বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম-মুখ্য সংগঠক আসাদুল্লাহ গালিব, সাদিয়া ফারজান দিনা, যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ এবং কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল হাসান সোহাগ।
তবে আলোচনা ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম তালুকদার। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং খিদির গ্রামের দুলা তালুকদারের ছেলে। তার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে এনসিপির অভ্যন্তরে যেমন ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
২০১৩ সালের কাউন্সিলের মাধ্যমে গঠিত শ্রীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কমিটি এখনও বহাল রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউনিটটির সভাপতি হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সাদ্দাম তালুকদার এখনও আমাদের কমিটির সাধারণ সম্পাদক। সুসময়ে সুবিধা নেওয়ার পর কেউ দুঃসময়ে দল ছাড়লে তা দুঃখজনক।’
এনসিপির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একজন বিতর্কিত, ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিনিধিকে দলে স্থান দেওয়া আমাদের বিকল্প রাজনীতির আদর্শের পরিপন্থি। আমরা পুরোনো ধারা ভেঙে নতুন রাজনীতি গড়তে চাই।’
এ বিষয়ে এনসিপির গাইবান্ধা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ফিহাদুর রহমান দিবসের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল হাসান সোহাগ সংক্ষেপে বলেন, ‘সাদ্দাম তালুকদার নামের কাউকে আমি চিনি না।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাওয়া এনসিপির এমন সিদ্ধান্ত তাদের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পুরোনো বিতর্কিত মুখগুলো নিয়ে নতুন রাজনীতির প্রত্যাশা বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে।