সুখী সম্পর্ক গড়তে হলে দুজন মানুষের সম্মিলিত চেষ্টা দরকার। সম্পর্ক টিকে থাকে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সময় দেয়া ও ঘনিষ্ঠতার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু কখনো কখনো দেখা যায়, দীর্ঘদিন একসাথে থাকার পরও একপক্ষ ধীরে ধীরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অপরপক্ষ বুঝতেই পারে না, কোথায় সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। মনোবিদরা বলছেন কিছু আচরণগত লক্ষণ বলে দিতে পারে যে, আপনার সঙ্গী হয়তো আর আগের মতো আপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
অগ্রাধিকার কমে যাওয়া: আপনি যদি দেখেন, সঙ্গী তার জীবনযাপনের অন্যান্য কাজ, বন্ধু বা বিনোদনের প্রতি আগ্রহ বেশি দেখাচ্ছেন, অথচ আপনার সঙ্গে সময় কাটানো বা আপনার কথা শোনা তার কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে না—তাহলে এটি একটি সতর্কবার্তা।
সময় না দেয়ার প্রবণত: যখন একজন সঙ্গী আর আগ্রহ দেখান না, তখন তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই সময় দেয়া কমিয়ে দেন। কাজের অজুহাতে দেখা-সাক্ষাৎ এড়িয়ে যান কিংবা ফোনে কথাও বলেন কম। এটি বোঝার একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।
সঙ্গীর ব্যাপারে উদাসীনতা: আপনার খাওয়া-দাওয়া, কাজ বা শারীরিক অবস্থা নিয়ে সঙ্গী যদি আগ্রহ দেখান না, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনি তার মানসিক ক্ষেত্র থেকে একটু একটু করে দূরে সরে যাচ্ছেন।
শারীরিক ও মানসিক দূরত্ব: দাম্পত্যে শারীরিক ও মানসিক ঘনিষ্ঠতা জরুরি। কিন্তু আগ্রহ কমে গেলে সঙ্গী আপনার সান্নিধ্য এড়িয়ে চলেন। একসাথে সময় কাটানো, আলাপ করা কিংবা দৈহিক ঘনিষ্ঠতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
বিরক্তি প্রকাশ সেই সঙ্গে কটাক্ষ করা: সঙ্গী যদি আপনার ছোট ছোট ভুলে অতিরিক্ত বিরক্ত হন কিংবা কথায় কথায় তির্যক মন্তব্য করেন, তাহলে এটি সহজেই বোঝা যায় যে তার ধৈর্যের সীমা কমে এসেছে এবং সম্পর্ক নিয়ে তিনি আর আগ্রহী নন।
অপমান করা: সবচেয়ে গুরুতর বিষয় হলো, যখন একজন মানুষ তার সঙ্গীকে বারবার ছোট করতে থাকে, অন্যদের সামনে অপমান করে বা উপেক্ষা করে, তখন বোঝা যায় সম্পর্কের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও অনুভূতি আর আগের মতো নেই।
সম্পর্ক মানে শুধুই একসঙ্গে থাকা নয়—বরং একে অপরের পাশে থাকা, বোঝা, শ্রদ্ধা করা ও ভালোবাসায় যুক্ত থাকা। যখন কোনো এক পক্ষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, তখন সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং অপরপক্ষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন। উপরে উল্লিখিত লক্ষণগুলো যদি আপনার সঙ্গীর মধ্যে দেখতে পান, তাহলে নিজেকে দোষারোপ না করে বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার চেষ্টা করুন।
সবার জীবনেই কাজের চাপ, মানসিক চাপ বা ব্যক্তিগত জটিলতা থাকতে পারে, যা কখনো কখনো আচরণে প্রভাব ফেলে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যাগুলো অব্যাহত থাকলে সম্পর্ক বিষিয়ে উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইলে আপনাদের উভয়ের আন্তরিক অংশগ্রহণ জরুরি। প্রয়োজনে পেশাদার কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নেয়াও বুদ্ধিমানের কাজ।

